সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ অপরাহ্ন

অতিরিক্ত লাভ করেও মিথ্যা লোকসানের গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) অভিযোগ করেছে, বাজারে সিন্ডিকেট করে হঠাৎ করেই মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করার পরও মিথ্যা লোকসানের দাবি করছে ব্রিডার ফার্মগুলো। সম্প্রতি তারা ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বললেও কোনো হিসাব বা এসংক্রান্ত তথ্য দেখাতে পারেননি। বরং সরকারিভাবে দেশে কোনো ফিড মিল বা হ্যাচারি না থাকার সুযোগ নিচ্ছেন তারা৷ উৎপাদন ব্যয় না বাড়লেও হঠাৎ করেই বাড়ানো হচ্ছে মুরগির বাচ্চার দাম। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রান্তিক খামারিরা।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেছেন বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।

তিনি বলেন, দেশের বৃহৎ ব্রিডার ফার্মগুলো ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বললেও তারা কোনো হিসাব তুলে ধরেনি। অন্যদিকে আমরা সব সময় অভিযোগ করে আসছি, তারা সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৮-৩০ টাকা হলেও অযৌক্তিকভাবে ৫২ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা সর্বোচ্চ ৫৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করে দিলেও কোম্পানিগুলো সব সময় মুরগির বাচ্চার সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রয় করছে। এমনকি এখনও একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৭০-৮০ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।
সুমন হাওলাদার বলেন, তবুও তারা লোকসানের গল্প শোনাচ্ছে। এগুলো সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। কোম্পানিগুলো মিথ্যা লোকসানের গল্প বলার সুযোগ পাওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে বার বার সিন্ডিকেটের চিত্র উঠে এলেও সরকার তদন্ত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আবার সরকারিভাবে ফিড মিল ও হ্যাচারি না থাকার কারণে ৮-১০টি কোম্পানির কাছে দেশের পোল্ট্রি খাত জিম্মি হয়ে গেছে। যার কারণে মাঝেমধ্যেই ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়।
আমরা মনে করি, কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর কাছে সরকার, প্রান্তিক খামারি এবং ভোক্তা সবাই জিম্মি হয়ে পড়েছি।

তিনি বলেন, সরকার সাভারে একটি ফিড মিল চালু করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত অজানা কারণে সেই ফিড মিল চালু হয়নি। অন্যদিকে সরকারি হ্যাচারিগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ। তার মানে যতদিন সরকার নিজস্ব ফিড মিল এবং হ্যাচারির চালুর ব্যবস্থা না করবে ততদিন এই সিন্ডিকেট বন্ধ হবে না। একদিকে তারা অতিরিক্ত মুনাফা করছে অন্যদিকে সরকারকে লোকসানের গল্প বলছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, কর্পোরেট কোম্পানির মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী ব্রিডার ফার্মগুলো, নিজেদের বিপুল মুনাফা লুকিয়ে মিথ্যা লোকসানের দাবি তুলেছে। এসব করে সামনে ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম আরও বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে।

বিবৃতিতে বেশ কয়েকটি দাবিও জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে —
১. ব্রিডার ফার্মগুলোর প্রকৃত লাভের হিসাব তদন্ত করে বের করতে হবে।
২. মুরগির বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রির ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য প্রচার করতে হবে।
৩. মাঠ পর্যায়ের ডিলার ও প্রান্তিক খামারিদের তথ্য বিশ্লেষণ করতে হবে।
৪. কোম্পানিগুলোর ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।
৫. সিন্ডিকেটের কার্যক্রম বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

একইসঙ্গে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় এবং দেশের পোল্ট্রি খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারের সঙ্গে বিপিএ কাজ করতে আগ্রহী বলেও মন্তব্য করেছেন সুমন হাওলাদার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Like Our Page