নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যে গত নভেম্বর মাসে অপহৃত ১০০ স্কুলশিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেলস টেলিভিশন–এর বরাতে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
গত ২১ নভেম্বর নাইজার রাজ্যের পাপিরিতে সেন্ট মেরিস ক্যাথলিক আবাসিক স্কুলে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ৩০৩ শিক্ষার্থী এবং ১২ জন স্কুলকর্মীকে অপহরণ করা হয়। ঘটনাটিকে দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ গণঅপহরণ বলে উল্লেখ করেছে খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন অব নাইজেরিয়া। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ৫০ শিক্ষার্থী পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও বাকি নিখোঁজদের অবস্থান অজ্ঞাত থেকে যায়। নিখোঁজদের মধ্যে ছয় বছর বয়সী শিশুও ছিল।
স্থানীয়রা বলছেন, সাম্প্রতিক এ অপহরণ ২০১৪ সালে চিবক শহর থেকে ২৭০–এর বেশি ছাত্রী অপহরণের পর সবচেয়ে বড় ঘটনা। চিবক ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত নাইজেরিয়ায় বিভিন্ন হামলায় ১,৪০০–র বেশি শিক্ষার্থী অপহৃত হয়েছে।
নাইজার রাজ্যে খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ড্যানিয়েল আটোরি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাইনি, ফেডারেল সরকারও কিছু জানায়নি। আমরা আশা করি খবরটি সত্যি এবং দ্রুত বাকি শিশুদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।’
সিএনএন জানিয়েছে, চিবোক গণঅপহরণের এক দশক পর আবারও বড় স্কুল-অপহরণের ঘটনা নাইজেরিয়ার দীর্ঘদিনের নিরাপত্তাহীনতার সংকটকে সামনে নিয়ে এসেছে।
এদিকে সাম্প্রতিক অপহরণের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, নাইজেরিয়ার খ্রিস্টানরা ‘গণহত্যার’ মুখে পড়েছে। তবে নাইজেরিয়ার সরকারি কর্মকর্তা ও খ্রিস্টান সংগঠনগুলো তার এ দাবির সঙ্গে একমত নয় বলে মন্তব্য করেছে। তাদের মতে, চলমান সহিংসতায় মুসলিম, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কিমিয়েবি ইমোমোটিমি এবিয়েনফা গত মাসে আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি দেশে সহিংসতা হয়েছে, কিন্তু এটি কেবল খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে নয়। মুসলিম এবং ঐতিহ্যবাহী ধর্মাবলম্বীরাও নিহত হয়েছেন। সংখ্যার বিচারে খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভুক্তভোগী নন।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, নাইজেরিয়া খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তিনি দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি নাইজেরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন তিনি।